ঢাকা,শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী আজ সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন

shekh-hasina_314598-550x329সি এন ডেস্ক :::
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ বিমানযোগে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে আজ শুক্রবার সৌদি আরব যাচ্ছেন। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে সৌদি সফরকালে প্রধানমন্ত্রী পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন। সৌদি বাদশাহর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বাদশাহ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তার সঙ্গে এটাই হবে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সৌদি আরব সফর। দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ, দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ়করণ এবং সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য।
এছাড়া এ সফরে সৌদি জোটে সামরিক সহায়তা ও সৌদি আরবে জনশক্তি রফতানির দ্বার সম্পূর্ণভাবে উন্মুক্ত হওয়ার বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে।
প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ১০ সদস্যের একটি উচ্চ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলও সৌদি আরব যাচ্ছে। ঘোষিত কর্মসূচি মোতাবেক, প্রধানমন্ত্রী আজ বিকালে ঢাকা থেকে বিশেষ ফ্লাইটে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় জেদ্দা পৌঁছবেন। রাতেই তিনি পবিত্র মক্কা শরিফে ওমরাহ পালন করবেন।
৫ জুন সৌদি বাদশাহর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেদ্দায় রাজকীয় প্যালেসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। এ সফরকালে সৌদি আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স, উপ-প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীসহ সৌদি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবের শীর্ষ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। আগামী ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র রওজা শরিফ জিয়ারতের উদ্দেশে মদিনা মুনাওয়ারা সফর করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ওই বছরেরই এপ্রিল মাসে সৌদি আরবে সরকারি সফর করেন এবং বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হন। তার ধারাবাহিকতায় সৌদি সরকার পরবর্তী সময়ে সেদেশে কর্মরত বাংলাদেশীদের জন্য আকামা (কাজের অনুমতি) পরিবর্তন ও অবৈধ কর্মীদের জন্য সাধারণ ক্ষমার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, আমাদের নিরবচ্ছিন্ন কর্মতৎপরতা ও নিবিড় কূটনৈতিক যোগাযোগের ফলে দু’দেশের সম্পর্ক ধারাবাহিকভাবে আরও সুদৃঢ় ও সম্প্রসারিত হয়েছে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়েরের আমন্ত্রণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী এ বছর জানুয়ারিতে সৌদি আরব সফর করেন এবং পরবর্তী সময়ে মার্চ মাসে তিনি ফিরতি সফরে ঢাকা আসেন। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন এ সফরের বিষয়টি তখনই চূড়ান্ত হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী আরও বলেন, সৌদি বাদশাহর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠেয় আলোচনায় দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সৌদি আরবে বাংলাদেশীদের জন্য শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অধিক হারে সৌদি সহায়তা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতা, হজ ব্যবস্থাপনাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের যাবতীয় বিষয়ে দুই শীর্ষ নেতা মতবিনিময় করবেন যা দু’দেশের বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও বেগবান করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
তিনি বলেন, সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্ককে আরও সম্প্রসারিত করা প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য।
সৌদি আরবে প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকালে দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে চুক্তি কিংবা সমঝোতা স্মারক সই হবে। সৌদি আরব সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে আগামী ৭ জুন মদিনা থেকে সরাসরি ঢাকায় ফিরবেন।

 

পাঠকের মতামত: